কর্মসূচির নাম: প্রতিবন্ধী ভাতা
ভূমিকা:
বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ প্রতিবন্ধী। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ বাস্তবায়নের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর (ডিএসএস) একটি সফটওয়ার প্রতিষ্ঠা করে যার নাম প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ (ডিআইএস)। প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ (ডিআইএস) এর তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ৩৩১৫৩০০ জন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিবন্ধিতা এবং এর কারণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে সমাজে নানা ধরনের ভুল বিশ্বাস ও প্রথা প্রচলিত রয়েছে। সরকার সামগ্রিক উন্নয়ন, অধিকার ও সুরক্ষার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মূল স্রোতে যুক্ত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। উল্লেখযোগ্য কর্মসূচির মধ্যে একটি হল প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি।
পটভূমি:
বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের সমান অধিকার ও মর্যাদা দিতে বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশে 'প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩' প্রণীত হয় ২০১৩ সালে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন 2013 হল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার এবং সুরক্ষার জন্য একটি অনন্য দলিল। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫, ১৭, ২০ এবং ২৯ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্যান্য নাগরিকদের সমান সুযোগ ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। সংবিধানের ১৫(ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার ২০২৫-০৬ অর্থবছর থেকে রাষ্ট্রের দায়িত্বের অংশ হিসেবে প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচি চালু করেছে। প্রাথমিকভাবে ১০৪১৬৬ জন প্রতিবন্ধীকে প্রতি মাসে ২00/- টাকা হারে ভাতা দেওয়া হয়।
চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী সুবিধাভোগীর সংখ্যা ২৩.৬৫ লাখ থেকে.২৯ লাখে উন্নীত হয়েছে। মাসিক ভাতার হার ৮৫০/- টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রতিবন্ধী ভাতা কর্মসূচির জন্য মোট বরাদ্দের পরিমাণ ২৯৭৮.৭১ কোটি টাকা। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নিবিড় তত্ত্বাবধানে এবং সমাজসেবা অধিদফতরের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে প্রতিবন্ধী ভাতা বিতরণ কার্যক্রম প্রায় ১০০% অর্জন করেছে।
প্রতিবন্ধী ভাতা কার্যক্রম অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য করে তোলার লক্ষ্যে বিদ্যমান বাস্তবায়ন নীতিমালা সংশোধন করে যুগোপযোগীকরণ, উপকারভোগী নির্বাচনে স্থানীয় মাননীয় সংসদ সদস্যসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্তকরণ এবং জিটুপি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে MIS (Management Information System) নামে ডাটাবেজ প্রণয়ন করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছর থেকে সকল উপকারভোগীদের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার নগদ ও বিকাশ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে জিটুপি পদ্ধতিতে (গভর্মেন্ট টু পারসন) ভাতা প্রদান করা হচ্ছে।
বাস্তবায়নকারী দফতর: সমাজসেবা অধিদপ্তর
কার্যক্রম শুরুর বছর: ২০০৫-২০০৬ অর্থবছর
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
১. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি প্রদত্ত সাংবিধানিক ও আইনগত প্রতিশ্রুতি পূরণ;
২. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন;
৩. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় আনয়ন;
৪. সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণপূর্বক উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাছাইকৃত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য মাসিক ভাতা প্রদান;
৫. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিষয়টি জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্তকরণ।
৬. প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জরিপ করে সুবর্ণ নাগরিক কার্ড প্রদান।
* প্রতিবন্ধী ভাতা কার্যক্রমের প্রযোজ্য আবেদন ফরম : সমাজসেবা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (dss.gov.bd) আবেদন ফরম রয়েছে।
* সেবা প্রাপ্তির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাঃ সংশ্লিষ্ট উপজেলা/শহর সমাজসেবা (ইউসিডি) কর্মকর্তা
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতা সংক্রান্ত তথ্যঃ
ক্রমিক নং |
ইউনিয়নের নাম |
ভাতাভোগীর সংখ্যা |
মাসিক ভাতার পরিমাণ |
বাৎসরিক বাজেট |
১ |
কুন্ডা |
৪৯৯ জন |
৪২৪১৫০ টাকা |
৭,৩৮,৫৮,২০০ টাকা (কথায়ঃ সাত কোটি আটত্রিশ লক্ষ আটান্ন হাজার দুইশত টাকা) |
২ |
গুনিয়াউক |
৩১৫ জন |
২৬৭৭৫০ টাকা |
|
৩ |
গোকর্ণ |
৭০৫ জন |
৫৯৯২৫০ টাকা |
|
৪ |
গোয়ালনগর |
৪০৪ জন |
৩৪৩৪০০ টাকা |
|
৫ |
চাতলপাড় |
৭৩৪ জন |
৬২৩৯০০ টাকা |
|
৬ |
চাপড়তলা |
৩৪৫ জন |
২৯৩২৫০টাকা |
|
৭ |
ধরমন্ডল |
৬১৭ জন |
৫২৪৪৫০টাকা |
|
৮ |
নাসিরনগর |
৬১১ জন |
৫১৯৩৫০ টাকা |
|
৯ |
পূর্বভাগ |
৫০২ জন |
৪২৬৭০০ টাকা |
|
১০ |
ফান্দাউক |
৪২২ জন |
৩৫৮৭০০টাকা |
|
১১ |
বুড়িশ্বর |
৫৯৯ জন |
৫০৯১৫০টাকা |
|
১২ |
ভলাকুট |
৮৮০ জন |
৭৪৮০০০ টাকা |
|
১৩ |
হরিপুর |
৬০৮ জন |
৫১৬৮০০ টাকা |
|
সর্বমোট |
|
৭২১৪ জন |
৬১,৫৪,৮৫০ টাকা |
|
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস